Forum
24
bd

















1. First of all registration here 2. Then Click on Be a trainer or writer button 3. Collect your trainer or writer id card from trainer master 4. And create post here for earn money! 5. For trainer 100 tk minimum withdraw 6. For writer 500 tk minimum withdraw 7. Payment method Bkash Only
sakerhosen sakerhosen
Trainer

1 year ago
sakerhosen

সদর ও অন্দর



সদর ও অন্দর


বিপিনকিশোর ধনীগৃহে জন্মিয়াছিলেন, সেইজন্যে ধন যে পরিমাণে ব্যয় করিতে জানিতেন তাহার অর্ধেক পরিমাণেও উপার্জন করিতে শেখেন নাই। সুতরাং যে গৃহে জন্ম সে গৃহে দীর্ঘকাল বাস করা ঘটিল না।

সুন্দর সুকুমারমূর্তি তরুণ যুবক, গানবাজনায় সিদ্ধহস্ত, কাজকর্মে নিরতিশয় অপটু; সংসারের পক্ষে সম্পূর্ণ অনাবশ্যক। জীবনযাত্রার পক্ষে জগন্নাথদেবের রথের মতো অচল; যেরূপ বিপুল আয়োজনে চলিতে পারেন সেরূপ আয়োজন সম্প্রতি বিপিনকিশোরের আয়ত্তাতীত।

সৌভাগ্যক্রমে রাজা চিত্তরঞ্জন কোর্ট্‌ অফ ওয়ার্‌‌‌ড্‌‌‌স্‌‌ হইতে বিষয় প্রাপ্ত হইয়া শখের থিয়েটার ফাঁদিবার চেষ্টা করিতেছেন এবং বিপিনকিশোরের সুন্দর চেহারা ও গান গাহিবার ও গান তৈয়ারি করিবার ক্ষমতায় মুগ্ধ হইয়া, তাহাকে সাদরে নিজের অনুচরশ্রেণীতে ভুক্ত করিয়া লইয়াছেন।

রাজা বি. এ. পাস। তাঁহার কোনোপ্রকার উচ্ছৃঙ্খলতা ছিল না। বড়োমানুষের ছেলে হইয়াও নিয়মিত সময়ে, এমন-কি, নির্দিষ্ট স্থানেই শয়ন ভোজন করিতেন। বিপিনকিশোরকে হঠাৎ তাঁহার নেশার মতো লাগিয়া গেল। তাঁহার গান শুনিতে ও তাঁহার রচিত গীতিনাট্য আলোচনা করিতে করিতে ভাত ঠাণ্ডা হইতে থাকে, রাত বাড়িয়া যায়। দেওয়ানজি বলিতে লাগিলেন, তাঁহার সংযতস্বভাব মনিবের চরিত্রদোষের মধ্যে কেবল ঐ বিপিনকিশোরের প্রতি অতিশয় আসক্তি।

রানী বসন্তকুমারী স্বামীকে তর্জন করিয়া বলিলেন, “কোথাকার এক লক্ষ্মীছাড়া বানর আনিয়া শরীর মাটি করিবার উপক্রম করিয়াছে, ওটাকে দূর করিতে পারিলেই আমার হাড়ে বাতাস লাগে।”

রাজা যুবতী স্ত্রীর ঈর্ষায় মনে মনে একটু খুশি হইতেন, হাসিতেন; ভাবিতেন, মেয়েরা যাহাকে ভালোবাসে কেবল তাহাকেই জানে। জগতে যে আদরের পাত্র অনেক গুণী আছে, স্ত্রীলোকের শাস্ত্রে সে কথা লেখে না। যে লোক তাহার কানে বিবাহের মন্ত্র পড়িয়াছে সকল গুণ তাহার এবং সকল আদর তাহারই জন্য। স্বামীর আধঘণ্টা খাবার সময় অতীত হইয়া গেলে অসহ্য হয়, আর, স্বামীর আশ্রিতকে দূর করিয়া দিলে তাহার একমুষ্টি অন্ন জুটিবে না, এ সম্বন্ধে সে সম্পূর্ণ উদাসীন। স্ত্রীলোকের এই বিবেচনাহীন পক্ষপাত দূষণীয় হইতে পারে, কিন্তু চিত্তরঞ্জনের নিকট তাহা নিতান্ত অপ্রীতিকর বোধ হইল না। এইজন্য তিনি যখন-তখন বেশিমাত্রায় বিপিনের গুণগান করিয়া স্ত্রীকে খ্যাপাইতেন ও বিশেষ আমোদ বোধ করিতেন।

এই রাজকীয় খেলা বেচারা বিপিনের পক্ষে সুবিধাজনক হয় নাই। অন্তঃপুরের বিমুখতায় তাঁহার আহারাদির ব্যবস্থায় পদে পদে কন্টক পড়িতে লাগিল। ধনীগৃহের ভৃত্য আশ্রিত ভদ্রলোকের প্রতি স্বভাবতই প্রতিকূল; তাহারা রানীর আক্রোশে সাহস পাইয়া ভিতরে ভিতরে বিপিনকে অনেকপ্রকার উপেক্ষা দেখাইত।

রানী একদিন পুঁটেকে ভর্ৎসনা করিয়া কহিলেন, “তোকে যে কোনো কাজেই পাওয়া যায় না, সমস্ত দিন করিস কী।”

সে কহিল, রাজার আদেশে বিপিনবাবুর সেবাতেই তাহার দিন কাটিয়া যায়।

রানী কহিলেন, “ইস্‌, বিপিনবাবু যে ভারি নবাব দেখিতেছি।”

পরদিন হইতে পুঁটে বিপিনের উচ্ছিষ্ট ফেলিয়া রাখিত; অনেকসময় তাহার অন্ন ঢাকিয়া রাখিত না। অনভ্যস্ত হস্তে বিপিন নিজের অন্নের থালি নিজে মাজিতে লাগিল এবং মাঝে মাঝে উপবাস দিল; কিন্তু ইহা লইয়া রাজার নিকট নালিশ ফরিয়াদ করা তাহার স্বভাববিরুদ্ধ। কোনো চাকরের সহিত কলহ করিয়া সে আত্মাবমাননা করে নাই। এইরূপে বিপিনের ভাগ্যে সদর হইতে আদর বাড়িতে লাগিল, অন্দর হইতে অবজ্ঞার সীমা রহিল না।
এ দিকে সুভদ্রাহরণ গীতিনাট্য রিহার্শালশেষে প্রস্তুত। রাজবাটির অঙ্গনে তাহার অভিনয় হইল। রাজা স্বয়ং সাজিলেন কৃষ্ণ, বিপিন সাজিলেন অর্জুন। আহা, অর্জুনের যেমন কন্ঠ তেমনি রূপ। দর্শকগণ ‘ধন্য ধন্য’ করিতে লাগিল।

রাত্রে রাজা আসিয়া বসন্তকুমারীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন অভিনয় দেখিলে।”

রানী কহিলেন, “বিপিন তো বেশ অর্জুন সাজিয়াছিল। বড়োঘরের ছেলের মতো তাহার চেহারা বটে, এবং গলার সুরটিও তো দিব্য।”

রাজা বলিলেন, “আর, আমার চেহারা বুঝি কিছুই নয়, গলাটাও বুঝি মন্দ।”

রানী বলিলেন, “তোমার কথা আলাদা।” বলিয়া পুনরায় বিপিনের অভিনয়ের কথা পাড়িলেন।

রাজা ইহা অপেক্ষা অনেক উচ্ছ্বসিত ভাষায় রানীর নিকট বিপিনের গুণগান করিয়াছেন; কিন্তু অদ্য রানীর মুখের এইটুকুমাত্র প্রশংসা শুনিয়া তাঁহার মনে হইল, বিপিনটার ক্ষমতা যে-পরিমাণে অবিবেচক লোকে তদপেক্ষা তাহাকে ঢের বেশি বাড়াইয়া থাকে। উহার চেহারাই বা কী, আর গলাই বা কী এমন। কিয়ৎকাল পূর্বে তিনিও এই অবিবেচকশ্রেণীর মধ্যে ছিলেন; হঠাৎ কী কারণে তাঁহার বিবেচনা-শক্তি বাড়িয়া উঠিল।

পরদিন হইতে বিপিনের আহারাদির সুব্যবস্থা হইল। বসন্তকুমারী রাজাকে কহিলেন, “বিপিনকে কাছারি ঘরে আমলাদের সহিত বাসা দেওয়া অন্যায় হইয়াছে। হাজার হউক, একসময়ে উহার অবস্থা ভালো ছিল।”

রাজা কেবল সংক্ষেপে উড়াইয়া দিয়া কহিলেন, “হাঁ! ”

রানী অনুরোধ করিলেন, “খোকার অন্নপ্রাশন উপলক্ষে আর-একদিন থিয়েটার দেওয়া হউক।” রাজা কথাটা কানেই তুলিলেন না।

একদিন ভালো কাপড় কোঁচানো হয় নাই বলিয়া রাজা পুঁটে চাকরকে ভর্ৎসনা করাতে সে কহিল, “কী করিব, রানীমার আদেশে বিপিনবাবুর বাসন মাজিতে ও সেবা করিতেই সময় কাটিয়া যায়।”

রাজা রাগিয়া উঠিয়া কহিলেন, “ইস্‌, বিপিনবাবু তো ভারি নবাব হইয়াছেন, নিজের বাসন বুঝি নিজে মাজিতে পারেন না।”


×

Alert message goes here

Plp file


Category
Utube fair

pixelLab দিয়ে নিজের নাম ডিজাইন ও Mocup

Paid hack

App link topup